প্রযুক্তি সংস্থাটির প্রায় ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন গুগলের প্রধান সুন্দর পিচাই। এই সিদ্ধান্তের দায় সম্পূর্ণ ভাবেই তার বলেও জানিয়েছিলেন পিচাই। সোমবার জানা গেল, পিচাইয়ের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে খুশি হয়ে গত ডিসেম্বরেই গুগল তার বেতন বিপুল অঙ্কে বাড়িয়েছে।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরস্কার হিসেবে সুন্দর পিচাইয়ের পারফরম্যান্স স্টক ইউনিট (পিএসইউ) ৬০ শতাংশে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেট ইনকরপোরেট। ২০১৯ সাল পিচাইয়ের পিএসইউ ছিল ৪৩ শতাংশ।
অ্যালফাবেটের নিয়ম অনুযায়ী, তিন বছর পরপর গুগল প্রধান ইকুইটি কমপেনসেশন পান। চলতি বছর সুন্দর পিচাই দুটি ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমূল্যের অংশ ও অ্যালফাবেটের সংরক্ষিত স্টক ইউনিটের জন্য ৮৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান পেয়েছেন।
নিজের বেতন বৃদ্ধি, অন্যদিকে নিজের সংস্থাতেই বিপুল পরিমাণে কর্মী ছাঁটাই পিচাইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কোনও কোনও মহল।
পিচাই দাবি করেছিলেন, এত সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হল অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ। তিনি জানিয়েছিলেন, গত দুইবছরে প্রচুর কর্মী নিয়োগ করেছে সংস্থা। অর্থনৈতিক মন্দার সময় এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া সংস্থার বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে বলেও তিনি দাবি করেছিলেন।
সম্প্রতি গুগ্লের কর্মীদের ‘গুগলার’ বলে সম্বোধন করে একটি ইমেল করেন পিচাই। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, আপনাদের সকলকে আমার একটি খারাপ খবর দেয়ার আছে। গুগল থেকে ১২ হাজার কর্মীকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এর জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত। আমি জানি, এই সময়টা কতটা কঠিন। এত দিন সকলের প্রচেষ্টায় আমাদের সংস্থা সাফল্যের পথে হেঁটেছে। সকলের অবদান সত্যিই অনস্বীকার্য। এই সিদ্ধান্তের দায় সম্পূর্ণ রূপে আমার।
প্রযুক্তিক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা এই মুহূর্তে বিপুল ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)-কে দায়ী করছেন। এআই-এর পেছনে বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমেই বাড়াচ্ছে প্রযুক্তি সংস্থাগুলো। এতেই টান পড়ছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কোষাগারে।
প্রযুক্তিক্ষেত্রে বর্তমানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে এআই-এর পেছনে বিনিয়োগ কমানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না কোনও কোম্পানি। সংস্থার আয় বৃদ্ধির নতুন পথও পাওয়া যাচ্ছে না। স্বভাবতই কর্মী ছাঁটাই করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মরিয়া চেষ্টা চলছে।
ফাইল ছবি