আগে থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে নিয়ে। বিশ্বকাপ চলাকালীন তার ক্লাব ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে বিচ্ছেদও হয়েছে। এইবার মরক্কোর কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে পর্তুগালকে বিশ্বকাপ জেতানোর স্বপ্নও ভেঙে গেল রোনালদোর। অশ্রুসিক্ত নয়নে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করলেন সিআর সেভেন।
মরক্কোর কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপ অধ্যায়ে ইতি টেনেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। রোনাল্ডোর দু’চোখে অঝোর ধারায় কান্না ভেসে আসছিল। চলতি বিশ্বকাপের নক আউটে ও কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে প্রথম একাদশে ছিলেন না রোনালদো। দুই ম্যাচেই দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেন।
তার জায়গায় সুযোগ পেয়ে গনসালো রামোস হ্যাটট্রিক করে বসেন। হুট করেই ফুটবলের অন্যতম বড় তারকা হয়ে গেলেন বদলি ফুটবলার।
যেসব হেডে রোনালদো গোল করতে ভালোবাসেন, তিনি এমন সুযোগও পেয়েছিলেন মরক্কোর বিপক্ষে। ম্যাচের ৯৭তম মিনিটে রোনালদোর মাথার ওপর দিয়ে বল চলে যায়, সতীর্থ পেপের মাথায় বল লেগে গোলবারের পাশ ঘেঁষে চলে যায় বল।
রোনালদো হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন, মনে হচ্ছিল তিনি ততক্ষণে বুঝে গেছেন, সময় ফুরিয়ে গেছে। শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে রোনালদো প্রতিপক্ষ দুই ফুটবলারের সাথে হাত মেলান। সোজা মাঠ ছাড়ার জন্য হাঁটা দেন। সাথে একজন ক্যামেরাম্যান। যিনি হয়তো এই মহাতারকার বিশ্বকাপের মঞ্চে শেষ কিছু মুহূর্ত ধরে রাখছিলেন।
রোনালদো টানেলের কাছে যাওয়ার পর আর বাঁধ মানেনি দুই চোখ, এটাই এই বিশ্বকাপে রোনালদোর হাইলাইটস হয়ে রইলো। রোনালদো মাঠ ছেড়ে বেরোলেন কাঁদতে কাঁদতে।
পর্তুগালের কোচ বলেন, রোনালদোর সাথে যা হয়েছে তা ম্যাচে কোনও প্রভাব ফেলেনি। আমরা একটি একতাবদ্ধ দল। আমি যদি বলি এই ম্যাচ এই ফলাফলের কারণে কোন দুজন বেশি কষ্ট পেয়েছে, সেটা রোনালদো ও আমি।
ফুটবল মহল ধরে নিয়েছে কাতারেই তিনি খেলে নিলেন ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। চোখের জলে বিশ্বকাপ যাত্রায় ইতি টানলেন রোনালদো।
রোনালদোর বোন কাটিয়া অ্যাভেইরো ইন্সটাগ্রামে একটি পোস্ট লিখেছেন, রোনালদো একটি সাম্রাজ্য তৈরি করে দিয়ে গেছেন। আমি তার শক্তির কথা বলবো, তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং পূরণ করেছেন। আমি তার চরিত্রের কথা বলবো, যিনি কখনো হার মানেননি।
বিবিসি স্পোর্টের রিপোর্টার ক্রিস বেভান লিখেছেন, এই সিনেমার শেষ কোথায় হবে আমি জানি না। কিন্তু হতে পারে আরও একটা বিশ্বকাপ খেলা রোনালদো আরও ভালো উপসংহার টানতে পারবেন। তখন রোনালদোর বয়স হবে ৪১, তার আগে তিনি একটা ইউরো পাবেন ২০২৪ সালে।
শুরুটা ভালো হওয়া মানেই শেষটা ভালো হবে তা নয়। পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো সঙ্গে যেমন হল।
ছবিঃ ইন্টারনেট।