সুমিত ঘোষ, মালদাঃ মালদা জেলার ওল্ড মালদা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড বাঁশহাটির নিবাসী মনোরঞ্জন দাসের প্রথমা কন্যা ঝর্না দাশের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় নদীয়া জেলার নিবাসী অভিরাম বাড়ুই এর সঙ্গে।
পেশায় মাংসের দোকানের কর্মচারী মনোরঞ্জন বাবু মেয়ের বিয়ের জন্য দ্বারস্থ হতে হয় আত্মীয় স্বজনদের কাছে।
সাধ্যমত সকলে সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু বিয়ের দিন যত কাছে আসে সবাই হাত গুটিয়ে নেয়। অগত্যা বিয়ে বন্ধের সামিল। কোনক্রমে এই সংবাদ গিয়ে পৌঁছাই নতুন প্রজন্মের কাছে। যেমনি কথা তেমনি কাজ। সম্পূর্ণ বিয়ের দায়িত্ব নিল এই সামাজিক সংগঠন।
ঝর্নার আইবুড়ো ভাত থেকে ছাদনাতলা সাজানো কনের মেকআপ, প্যান্ডেল, ফটোগ্রাফি, চা,কফি থেকে অতিথিদের পাত পেড়ে খাওয়ানো কোনটাই বাকি নেই, এমনকি মেনু কার্ডে রক্তদানের বার্তা। এই সংগঠনের প্রত্যেকটি সদস্য এক একটি বিষয়ে পারদর্শী। কেউ বা ফটোগ্রাফি, কেউ বা নিয়েছেন জলের দায়িত্ব, কেউবা দই-মিষ্টির। ১৩ ই ডিসেম্বর শুভবিবাহ ১৪ ই ডিসেম্বর ২০২১ সকালে কনে বিদায়।
এই অভিনব সমাজকর্মে রাজসাক্ষী ওল্ড মালদা সহ নদীয়া থেকে আগত বড়যাত্রী বেশে দুইশত জন অতিথি। একেবারে বড় দিদির ভূমিকা নিয়ে নিজ হাতে নিজ গৃহে আইবুড়ো ভাত ,মেহেন্দি পরানো সহ, মেয়ে বিদায়ের দায়িত্ব সামলিয়েছেন সংগঠনের অন্যতম সদস্যা কোয়েল ঘোষ। আমরা সবাই মিলে ছোট ছোট দায়িত্ব নিয়ে এইভাবে যদি দেশটার দায়িত্ব নিতে পারতাম তাহলে কতই না ভালো হত আবেগ তাড়িত হয়ে কথাগুলি বললেন নতুন প্রজন্মের সম্পাদক হারাধন সাহা। পাত্রী আবেগ তাড়িত হয়ে বলে ফেললেন আমরা গরীব স্বপ্নেও কোনোদিন ভাবিনি এত সুন্দর ভাবে আমার বিয়ে হতে পারে। নতুন প্রজন্মের দাদা দিদিদের কথা জীবনে কোনদিন ভুলবো না। এই শুভ কাজে কনেকে আশীর্বাদ করতে বিয়ে বাড়িতে সশরীরে হাজির হন ভারত স্কাউটস্ এন্ড গাইডস্ মালদা জেলা শাখার জেলা রক্তদান শিবির আহ্বায়ক অনিল কুমার সাহা, মালদা সহযোগিতা সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ, উদীচী মালদার সম্পাদিকা অঞ্জনা মণ্ডল, সেন্ট জন অ্যাম্বুলেন্সের সমাজকর্মী সুরজিৎ মন্ডল প্রমুখ।