কর্নাটক রাজ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, অন্তত দুই ব্যক্তির দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়।
দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার প্রথম ঘটনা। দক্ষিণ আফ্রিকায় গত মাসের প্রথম দিকে শনাক্ত হওয়া করোনার এ নতুন ধরন ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব লেভ আগারওয়াল বলেন, ওমিক্রন আক্রান্ত দুই ব্যক্তির বয়স যথাক্রমে ৬৬ ও ৪৬। তারা উভয়েই বিদেশ থেকে এসেছেন।
তিনি জানান, গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে আপাতত তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ দুই ব্যক্তির সংস্পর্শে আরও যারা এসেছেন, তাদেরকেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
শনাক্ত হওয়া দুজনেরই লক্ষণ এখন পর্যন্ত ছিল মৃদু। লেভ আগারওয়াল বলেন, ‘ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। সচেতনতাই জরুরি। কোভিডের আচরণবিধি মেনে চলুন। সেইসঙ্গে জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।’
গত ৮ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার গাউতেং প্রদেশে (রাজধানী জোহান্সবার্গ) প্রথম করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। পরে তা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের একজনের দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।
Two cases of #Omicron Variant reported in the country so far. Both cases from Karnataka: Lav Agarwal, Joint Secretary, Union Health Ministry#COVID19 pic.twitter.com/NlJOwcqGDf
— ANI (@ANI) December 2, 2021
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানায়, ইতোমধ্যে বিশ্বের কমপক্ষে ২৪টি দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ ভারত যোগ হওয়ায় এ সংখ্যা ২৫-এ পৌঁছালো।
বিশ্বের অনেক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা ও এর আশাপাশের কয়েকটি দেশের সঙ্গে তাদের বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু তাতেও তেমন কাজ হচ্ছে না।
ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যে সতর্ক করেছেন যে, ওমিক্রন করোনা ভাইরাসের অন্য ধরনগুলো থেকে বেশ আলাদা। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। এর সংক্রমণ-ক্ষমতা করোনার অতিসংক্রমণশীল ধরন ডেল্টার চেয়েও বেশি বলে জানিয়েছেন তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউট (এনআইসিডি) বলছে, ওমিক্রনের প্রোফাইল এবং মহামারি বিষয়ক প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা গেছে, কিছু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে (ইমুউনিটি) ফাঁকি দিতে এটা সক্ষম। তথাপি গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যু ঠেকাতে প্রচলিত ভ্যাকসিন কাজ করতে পারে।
এনআইসিডি বলছে, গত মাসে যেসব নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭৪ শতাংশই ছিল নতুন ধরনের (ওমিক্রন)। গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে ওমিক্রনের ঘোষণা এলেও তা প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ৮ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার গাউতেং প্রদেশে।
গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকায় যে সংখ্যক লোকের করোনা শনাক্ত হয়েছে, বুধবার ছিল তার দ্বিগুণ। ওয়ার্ল্ডডোমিটার্স এর তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকায় বুধবার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৫৬১ জন। এর আগের দিন এ সংখ্য ছিল ৪ হাজার ৩৭৩ জন।
পুরো মহামারি পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় এ পর্যন্ত করোনা প্রাণ গেছে ৮৯ হাজার ৮৭১ জনের। করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬১৩ জনের। সেরে উঠেছেন ২৮ লাখ ৫০ হাজার ১৪২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারি বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরখোভ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নথি ঘেঁটে বলা যায়, ওমিক্রন কতোটা সংক্রামক তা ‘কয়েক দিনের’ মধ্যেই জানা যাবে।