কালীঘাট মন্দির

Published By: Khabar India Online | Published On:

কালীঘাট মন্দির

কালীঘাট মন্দির কলকাতার একটি প্রসিদ্ধ কালীমন্দির এবং একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম হিন্দু তীর্থক্ষেত্র। এই তীর্থের পীঠদেবী দক্ষিণাকালী এবং ভৈরব বা পীঠরক্ষক দেবতা নকুলেশ্বর রূপে পূজিত হন। পৌরাণিক কিংবদন্তি অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের চারটি (মতান্তরে একটি) আঙুল এই তীর্থে পতিত হয়েছিল। পুরাণ মতে এ স্থান বারাণসী তুল্য । কবি ভরতচন্দ্রের লেখাতে পাওয়া যায়,
বলা হয় বেহালা থেকে ২ যোজন ব্যপি কালি ক্ষেত্রের ৩ প্রান্তে অবস্থিত স্বয়ং ব্রহ্মা , বিষ্ণু ও শিব আর তার মাঝেই দেবীর অবস্থান। দেবী এখানে ভৈরবী , বগলা , মাতঙ্গী , বিদ্যা , কমলা , ব্রাহ্মী , মহেশ্বরী , চণ্ডী প্রভৃতি রূপে পূজিতা । দীপান্বিতা অমাবস্যাতে দেবীকে মহালক্ষ্মী রূপে পূজা করা হয়।
সত্যযুগে প্রজাপতি দক্ষ স্বগৃহে এক মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। সেই যজ্ঞে দেবতা, মুনি-ঋষি, যক্ষ, কিন্নর সকলকে নিমন্ত্রণ করলেও, দক্ষ আপন কন্যা সতী ও জামাতা শিবকে নিমন্ত্রণ জানাননি। সতী বিনা আমন্ত্রণে যজ্ঞস্থলে উপস্থিত হলে, তাঁর সম্মুখেই যক্ষ শিবের নিন্দা করেন। পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে তৎক্ষণাৎ যজ্ঞকুণ্ডে আত্মবিসর্জন দেন সতী। তখন শিব ক্রুদ্ধ হয়ে সতীর শবদেহ স্কন্ধে নিয়ে বিশ্বধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাণ্ডবনৃত্য শুরু করেন। তাঁকে শান্ত করতে বিশ্বপালক বিষ্ণু আপন সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে দেন। সতীর খণ্ডবিখণ্ড দেহের টুকরোগুলি পৃথিবীর নানা স্থানে পতিত হয়েছিল। পৃথিবীতে পড়ামাত্রই এগুলি প্রস্তরখণ্ডে পরিণত হয়। পীঠমালা তন্ত্র অনুযায়ী, সতীর ডান পায়ের চারটি আঙুল পড়েছিল কালীঘাটে।

আরও পড়ুন -  Temple In Bhubaneswar: ভুবনেশ্বরের একটি মন্দিরের আদলে তৈরি

ইতিহাস
কালীঘাট কালীমন্দিরের কষ্টিপাথরের কালীমূর্তিটি অভিনব রীতিতে নির্মিত। মায়ের মাথা সোনার মুকুটে শোভিত । রয়েছে সোনার তৈরি লম্বা জিভ যেটি গড়িয়ে দিয়েছিলেন পাইক পাড়ার রাজা ইন্দ্র চন্দ্র সিংহ এবং রুপোর তৈরি চারটি হাত যা তৈরি করে দিয়েছিলেন খিদিরপুরের গোকুল চন্দ্ৰ ঘোষাল। সেই হাত পরে সোনার করে দিয়েছিলেন কালী চরণ মল্লিক। ১০৮ সোনার মুন্ড মালা দান করেছিলেন ১৭৬৫ সালে পাতিয়ালার মহারাজ রাজা নবকৃষ্ণ। এছাড়া দেবীর মাথার উপরের সোনার ছাতা দান করেছিলেন নেপালের সেনাপতি জঙ্গ বাহাদুর। এছাড়াও আরও কয়েকটি সোনার ও রূপার ছাতা রয়েছে। চারহাতের চারগাছি সুবর্ণ কঙ্কণ চড়কডাঙা নিবাসী কালীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতামহ রামজয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রদান করেন। মায়ের পদতলে রয়েছেন ১ মন ওজনের রূপার শিব। পেছনে রয়েছে ২৫ কেজি রূপার তৈরি নকশা করা চালচিত্র। উপরের বাম হাতে আছে ২ কেজি ওজনের সোনার খড়্গ । নিচের বাম হাতে আছে ১টি সোনার মুন্ড। ডান দিকের২ হাতে রয়েছে বর ও অভয় মুদ্রা । এইরূপ বহু স্বর্ণালংকার বহু ধনাঢ্য লোকের দ্বারা প্রদানকৃত । ১টি সিন্দুকে সতীর প্রস্তরীভূত অঙ্গটি রক্ষিত আছে; এটি কারোর সম্মুখে বের করা হয় না আর এটি ব্রহ্মবেদীর নিচে রয়েছে।

আরও পড়ুন -  Gold Price Today: তরতরিয়ে বাড়ছে সোনার দাম, এই দাম জেনে ক্রেতাদের মাথায় হাত