কিছু দম্পতি চেষ্টা করার এক মাসের মধ্যেই গর্ভধারণ করে, আবার অনেকের অপেক্ষার সময় দীর্ঘ হতে পারে কারণ তাদের শরীর এটার জন্য হয়তো প্রস্তুত থাকে না ওই সময়। অবশ্যই গর্ভবতী হওয়ার আগে একটি সুস্থ গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এর জন্য নিজেকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রস্তুত থাকা দরকার। প্রি-কনসেপশন প্ল্যানিং আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকে বুঝতে সাহায্য করবে কীভাবে আপনার সুস্থ গর্ভাবস্থার সম্ভাবনা উন্নত করা যায়। গর্ভবতী হওয়ার চেষ্টা করার সময় অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
নিয়মিত মেডিকেল চেক-আপ।
প্রি-প্রেগন্যান্সি টেস্ট আপনাকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যেকোনো জটিলতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করতে পারে। আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনায় প্রভাব ফেলতে পারে এমন সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা জরুরি। আপনাদের সুস্থতা এবং গর্ভধারণ সম্ভাবনা সম্পর্কে জানার জন্য আপনি এবং আপনার সঙ্গী উভয়েরই একটি মেডিকেল চেক-আপ করা প্রয়োজন।
যেসব ওষুধ খাচ্ছেন সতর্ক থাকুন
মাথাব্যথা, সর্দি এবং মানসিক উদ্বেগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর জন্য প্রতিদিন যেসব ওষুধ এবং ভেষজ ওষুধ খেয়ে থাকেন তবে তা পর্যালোচনা করুন। আপনার ডাক্তারের সঙ্গে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করুন কারণ এতে এমন কিছু উপাদান থাকতে পারে যা গর্ভাবস্থায় ভালো নাও হতে পারে।
সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখুন
ধূমপান, মদ্যপান ত্যাগ করুন এবং একটি সুস্থ গর্ভাবস্থার জন্য আপনার ঘুমের সময়সূচী ঠিক রাখুন। গর্ভাবস্থায় এবং পরে আপনার এবং আপনার শিশুর সুস্থতার ওপর এই তিনটি জিনিসের বড় প্রভাব রয়েছে। দিনে কমপক্ষে ৮-৯ ঘণ্টা ঘুমান।
ব্যায়াম করুন
গর্ভাবস্থার আগে এবং সময়কালে ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম করার অর্থ এই নয় যে আপনাকে কঠোর শরীরচর্চা করতে হবে। এর মানে কেবল শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা।
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
মাল্টিভিটামিন শরীরের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে, তবে শুধু তার ওপর নির্ভর করবেন না। গর্ভবস্থার পরিকল্পনা করার সময় থেকেই স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার খান। জাঙ্ক এবং চর্বিযুক্ত খাবারের পরিমাণ হ্রাস করুন। বেশি বেশি শাক, ফল, বাদাম, আস্ত শস্য এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রাখুন খাবারের তালিকায়।
মাল্টিভিটামিন যোগ করুন
গর্ভাবস্থার নয় মাসের দীর্ঘ যাত্রা একজন নারীর জন্য সহজ নয়। গর্ভাবস্থা বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের দিকে পরিচালিত করে। এটি সুস্থ এবং ফিট থাকার জন্য পুষ্টির চাহিদা বাড়ায়। এছাড়া গর্ভের ভেতরে বেড়ে ওঠা শিশুর চাহিদা পূরণের জন্য পুষ্টিরও প্রয়োজন হয়। সুতরাং, একটি সুস্থ গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করতে হবে। আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন এবং মাল্টিভিটামিন ও ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করুন, যা শিশুর বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন
যদি আপনার বা আপনার সঙ্গীর উচ্চতর বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) থাকে, তাহলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিন। যারা গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন তাদের জন্য অতিরিক্ত ওজন একটু সমস্যা হতে পারে। এর সঙ্গে যদি আপনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো আরও অনেক বিপাকীয় রোগে ভুগে থাকেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খান এবং এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। সূত্রঃ টাইমস অব ইন্ডিয়া