শনিবার গভীর রাতে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর হঠাৎ হানা দেন বাণিজ্যনগরীর উপকূলের মাঝে চলা এই ক্রুজ পার্টিতে। বিলাসবহুল রেভ পার্টিতে উপস্থিত থাকা ব্যাক্তিদের থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অবৈধ মাদক দ্রব্য। পার্টিটি মুম্বাই থেকে গোয়াশনিবার মধ্যরাত থেকে টানা ১৬ ঘণ্টা জেরার পর রবিবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় আরিয়ান ও তাঁর দুই বন্ধুকে।
রবিবার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তরফ থেকেও এক দিনের এনসিবি হেফাজতের নির্দেশ ছিল। সোমবার ফের একবার আদালতে হাজির করা হয় আরিয়ান খান, আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচাকে। আদালতের তরফে তিন অভিযুক্তকেই ৭ অক্টোবর অবধি এনসিবি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে গত সোমবার এই তিনজনকে মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে। সঙ্গে করোনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে সোয়াব স্যাম্পেলও। এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই মাদক চক্রের হদিশ করতে ক্রুস পার্টিতে অভিযান চালায় এনসিবি। এনসিবির একজন অফিসার বলেছিলেন, আটক করার সময় যখন আরিয়ানকে এনসিবি অফিসে তাঁদের সঙ্গে যেতে বলা হয়েছিল, তখন তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন?
এনসিবি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এনসিবির ৬ জন অফিসার এই অভিযানের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন। জানা যায়, ক্রুজে ‘রেভ পার্টি’-র আয়োজনের খবর ১৫ দিন আগেই পেয়েছিল এনসিবির অফিসাররা। আসল অপরাধীদের ধরার জন্য সেই মতোই ঘুঁটি সাজিয়েছিল তাঁরা। এনসিবির সদস্যরা ছদ্মবেশে সেই ক্রুজে উঠেছিলেন। এই বিলাসবহুল ক্রুজের টিকিটের মূল্য ছিল প্রায় এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি। কেউ যেন সন্দেহ না করে, সেই কারণে তিনবার আলাদা ভাবে তিনটি টিকিট ক্রয় করেছিলেন। টিকিট মূল্য বেশি হওয়ায় এনসিবির বেশি কর্মকর্তাদের নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়। এই অভিযানের জন্য আগে থেকে কর্মকর্তারা সেই ক্রুসের রুট চেক করেছিলেন এবং সঙ্গে করে ৬টি বোটও নিয়ে গিয়েছিলেন। আরো বলা হয় এইদিন ১ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে সকলে পার্টির জন্য প্রবেশ করতে শুরু করে।
বেশিরভাগ অতিথি যখন চলে আসেন, তখন সেই ক্রুশের সিআইএসএফকে ‘ভিআইপি’ অতিথিদের জন্য আলাদা পথ তৈরি করতে বলা হয়েছিল। এরপদ সিআইএসএফ জানিয়েছে যে তাদের পরীক্ষা করা হবে। এর পরে আরিয়ান খান এবং আরবাজ মার্চেন্ট ভিআইপি অতিথি হিসাবে ভিতরে প্রবেশ করেন এরপর তাদের আইডি কার্ড চেক করা হয়। তাদের জিনিসপত্র এবং মার্চেন্টের জুতা স্ক্যান করা শুরু করা হয়। জুতো স্ক্যান করার সঙ্গে সঙ্গেই আরিয়ান ঘাবড়ে যায়। গামী এম্প্রেস শিপের কর্ডেলিয়া আরিয়ান ঘাবড়ে যেতেই এনসিবি আরও সতর্ক হয়ে যায়। এর পরে জুতাগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করা হয় এবং সেই জুতাগুলো থেকেই ড্রাগ পাওয়া যায়। মিডডে -র রিপোর্ট অনুসারে, আরিয়ান নিজের বক্তব্যে বলেছিলেন, আরবাজের কাছে যে চরস খুঁজে পাওয়া যায় দুই বন্ধুর একসাথে সেটা নেওয়ার কথা ছিল। একজন এনসিবি কর্মকর্তা জানান, যখন শাহরুখ খানের ছেলেকে এনসিবি কর্মকর্তারা তাঁদের সঙ্গে অফিসে হেঁটে যেতে বলেন, তখন সে ভয় পেয়ে গিয়ে ক্ষমা চাইতে শুরু করে। এনসিবি কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, আরিয়ানের থেকে কোনও নিষিদ্ধ ড্রাগ ইত্যাদি পাওয়া যায়নি। আরবাজ মার্চেন্টের জুতায় অল্প পরিমাণ চরস পাওয়া গেছে।