কানাডায় গৃহবন্দী চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝু তিন বছর পর মুক্তি পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতার পর শুক্রবার কানাডার আদালতে উপস্থিত হলে তাকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। খবর বিবিসির।
মার্কিন বিচার বিভাগের বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতায় মামলার বিচার প্রক্রিয়া মুলতবি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেং ওয়ানঝুর বিরুদ্ধে মামলা মুলতবি থাকবে এবং যদি তিনি আদালত প্রদত্ত শর্তাবলী মেনে চলেন, তাহলে শেষ পর্যন্ত মামলাটি বাতিল হয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, স্কাইকম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইরানের টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করছে হুয়াওয়ে। এতে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেওয়া নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘিত হয়েছে।
মেং ওয়ানঝু ভ্যাংকুভারের একটি আদালতে উপস্থিত হওয়ার পর কানাডিয়ান প্রসিকিউটররা আদালতকে বলেন, তারা তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের প্রচেষ্টা প্রত্যাহার করেছে এবং তার মুক্তি দেওয়া উচিত। এরপর বিচারক তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
মুক্তি পাওয়ার পর মেং ওয়ানঝু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার জীবন এলোমেলো হয়ে গেছে। এটা আমার জন্য খুবই খারাপ সময় ছিল।’ তিনি আরও বলেন, সারাবিশ্বের মানুষের কাছ থেকে প্রাপ্ত ভালোবাসা আমি কখনো ভুলবো না।
তিনি শনিবারের মধ্যেই চীনে ফিরে যেতে পারবেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে জালিয়াতির অভিযোগে মেং ওয়ানঝুকে ভ্যাংকুভার বিমানবন্দর থেকে আটক করে কানাডা। এরপর থেকে তিনি তিন বছর ধরে কঠোর নজরদারির মধ্যে তার ভ্যাংকুভারের বাড়িতে গৃহবন্দী ছিলেন।
তাকে আটক করার পর চীন ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে চীনের সম্পর্কের অবনতিও ঘটে। তবে মেং ওয়ানঝু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
মেং ওয়ানঝু হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেইয়ের বড় মেয়ে। ১৯৯৯ সালে হুয়াওয়ে যোগ দেওয়ার পর ২০১১ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হন। আটকের কয়েক মাস আগে ২০১৮ সালে তাকে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়।
সূত্র: বিবিসি ও রয়টার্স