খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ এসএসকে ও এমএসকে শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। এর পরেও যারা অন্যায় ভাবে বদলি করার অভিযোগ থেকে বিষ পান করার চেষ্টা করছেন এবং সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন তারা কোনভাবেই শিক্ষক না বরং তারা বিজেপির ক্যাডার। কার্যত এরকম ভাষাতেই আজকে এই বিষপানকারী ৫’জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
গতকাল অন্যায় ভাবে বুদ্ধির অভিযোগে বিকাশ ভবনের সামনে বিষ পান করেন পাঁচজন এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষিকা। তাদের দাবি ছিল, তাদের বাড়ি এক জায়গাতে হলেও তাদেরকে অন্য জেলায় বদলি করা হচ্ছে। শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন। তারা নবান্নের সামনে গিয়েছিলেন এবং গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাদের অভিযোগ ওই প্রতিহিংসাবশত আন্দোলনের শাস্তি হিসেবে তাদের হোম ডিস্ট্রিক থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় বদলি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিষপানের জেরে ৩ জন আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং দুইজন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনজনকে আইসিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুরো ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পুরো পশ্চিমবঙ্গে।
এই ঘটনার পরেই প্রকাশ্যে এবার মুখ খুললেন ব্রাত্য বসু। তিনি আজকের বক্তব্য থেকে সরাসরি বাম সরকারকে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, ‘ বাম সরকারের আমলে মোট পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে থাকা এসএসসি এবং এমএসকে সহায়ক সহায়িকা এবং সম্প্রসারক সম্প্রসারিকা অংশটি নামমাত্র সাম্মানিক এর বিনিময়ে কাজ করতো। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে এই সাম্মানিক এর পরিমাণ বৃদ্ধি হয়েছে কাজের নিশ্চয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে তাদেরকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গত বছর পয়লা ডিসেম্বর থেকে তৃণমূল সরকার এসএসকে এবং এমএসকে পদগুলিকে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের অধীনে নিয়ে এসে তাদেরকে একটি সু সংবদ্ধ রুপ দিয়েছে। সহায়ক এবং সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১০,৩৪০ টাকা করা হয়েছে। সম্প্রসারক এবং সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩,৩৯০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতি বছরে ৩ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট চালু রয়েছে।সকলকে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়াও যারা ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে অবসরের সময় প্রত্যেকের জন্য একটি তিন লাখ টাকার একাডেমি অবসর ভাতা চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চলতি বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে প্রফিডেন্ট ফান্ড চালু করা হয়েছে তাদের জন্য। মহিলাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং প্রত্যেকের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে।’
এরপরই ব্রাত্য বসু বলেন, এতগুলো সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরেও যারা সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করে এবং সরকারকে শুধুমাত্র ব্ল্যাকমেইল করে আন্দোলন করতে চাইছেন তারা প্রকৃত শিক্ষক শিক্ষিকা নন। এভাবে যারা আর আন্দোলন করছেন তাদের থেকে নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখছে? তার পরেই তিনি সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ দাগেন। তিনি বলেন, ‘এত কিছু পাওয়ার পরেও যারা আন্দোলন শুরু করেছেন তারা কোনোভাবেই শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বরং তারা বিজেপির ক্যাডার।’