খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ করোনা ভাইরাসের সময় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বামফ্রন্ট তৈরি করেছিল একটি রেড ভলেন্টিয়ার গ্রুপ। বলতে গেলে এটি একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। করোনাভাইরাস এর সময় সকলের জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে বামফ্রন্টের তরফ থেকে এই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে এখনো অনেক জায়গাতেই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর মানুষজন কাজ করছেন বটে। কিন্তু আসছে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ। তৃতীয় ঢেউয়ের সময় মানুষকে সাহায্য করার জন্য এবার গেরুয়া শিবির এর তরফ থেকে তৈরি হতে চলেছে একটি গেরুয়া ভলেন্টিয়ার বাহিনী। যদিও পোশাকি নামে কোন রকম রঙের উল্লেখ রাখা হচ্ছে না, বরং নাম রাখা হচ্ছে শুধুমাত্র হেলথ ভলান্টিয়ার।
প্রাথমিকভাবে কাজ হবে চার লক্ষ দলীয় কর্মীকে নিয়ে করোনাভাইরাস এর সময় মানুষকে সাহায্য করা, ঠিক যেমন ভাবে সাহায্য করেছে রেড ভলেন্টিয়ার বাহিনী। সারাদেশে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে বিজেপির তরফ থেকে। পশ্চিমবঙ্গেও এই শিবির কাজ করবে বলে জানা যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দলীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য। এবং এই প্রশিক্ষণ শিবিরে কাজ শেষ হয়ে গেলে দুই লক্ষ গ্রামে শুরু হয়ে যাবে পরিষেবা। মূলত গ্রামের জন্যই এই পরিষেবা নিয়ে আসছে গেরুয়া বাহিনী। ইতিমধ্যেই এর জন্য একটি নতুন হেল্পলাইন নম্বর তৈরি করে ফেলেছে বিজেপি।
রেট ভলেন্টিয়ার যে ভাবে কাজ করছে, তাতে সিপিআইএমের ভাবমূর্তি বর্তমানে অনেকটা উন্নত। সাধারণত করণা আক্রান্ত রোগীদের পরিষেবা দিতে কাজ করে তাদেরই রেট ভলেন্টিয়ার বাহিনী। প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়াতে ফোন নম্বর দিয়ে প্রচার শুরু হয়। জানানো হয় দিন হোক বা রাত যখন কোনো প্রয়োজন হবে তখনই ভলেন্টিয়ারদের ফোন করতে পারেন। কেউ মারণ রোগের আক্রান্ত হলে সেই বাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সমস্ত পরিষেবা দিয়েছিলেন। এর ফলশ্রুতিতে, সারা পশ্চিমবঙ্গে রেড ভলেন্টিয়ার এর জয়জয়কার হয়েছিল। ভোট বাক্সে এর প্রতিফলন না দেখা গেলেও, রেড ভলেন্টিয়ার বর্তমানে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হয়ে উঠেছে।
এবারের রেড ভলেন্টিয়ার এর সঙ্গে পাল্লা দেবার জন্য গেরুয়া শিবির তৈরি করতে চলেছে একটি নতুন স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। বাহিনীর কাজ হবে একেবারে রেড ভলেন্টিয়ার এর মত। এরা নিজেদের কার্যপদ্ধতি এবং লক্ষ্য একই রেখে কাজ চালাবে আর্ত মানুষদের জন্য। তার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত করবে তারা। সব মিলিয়ে, বিজেপির তরফ থেকে এই নতুন কর্মসূচি পালনের জন্য সকলেই উঠে পড়ে লেগেছেন। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “করোনা ভাইরাসের সময় প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আমাদের কর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছিল। সেই সময় কাজ করা অত্যন্ত বিপজ্জনক ছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা, এখন অনেকে টিকা গ্রহণ করতে পারছে। এই কারণে আমরা আরো বেশি কর্মী নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। মূলত সেই কারণেই আমরা এই নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।”
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিজেপি যে শুধুমাত্র মানুষের ভালো করার জন্য এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে না সেটাতো খুব স্বাভাবিক। এই কর্মসূচি গ্রহণের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বৈকি। এই বিষয়টি সায়ন্তন বসুর কথায় একেবারে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি নিজেই বলেন, ” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সকল মানুষের জন্য বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের টিকা নিয়ে রাজনৈতিক খেলা চলছে। রাজনৈতিক রঙ দিয়ে দেখা হচ্ছে এই সমস্ত টিকা কে। আমাদের কর্মসূচিতে এটাও হবে যাতে সকলের টিকা নিশ্চিত করা যায়। সেই লক্ষ্যে কাজ করবে আমাদের বাহিনী। ” অর্থাৎ, বিজেপির লক্ষ্য মানুষের ভালো করে প্রচার পাওয়া এবং মানুষের ভালো করতে গিয়ে প্রচার করে আসা দুটোই একসাথে।