খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ জল্পনা সত্যি করে রাতে রাজ্যপাল বেবিরানি মৌর্যের কাছে গিয়ে নিজের ইস্তফা পত্র জমা দিয়ে এলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত। ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত কে সরিয়ে দেওয়ার পরে তার জায়গায় ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন তিরথ সিং রাওয়াত। তিনি উত্তরাখণ্ডের পাউড়ি গারোয়ালের সাংসদ। আগের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এই কারণে আগের মুখ্যমন্ত্রী কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
রাওয়াতের ক্ষেত্রে একটা অন্য সমস্যা ছিল, যে সমস্যাটা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে হচ্ছে। নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার পরে আগামী ৬ মাসের মধ্যে কোন একটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে অথবা কোন একটি হাউজ থেকে জিতে আসতে হবে তাকে। উত্তরাখণ্ডে বিধান পরিষদের কোন ব্যাপার নেই আপাতত, এত তাড়াতাড়ি সম্ভব নয় বিধান পরিষদ তৈরি করা এত ছোট একটি রাজ্যে। তাই এই ক্ষেত্রে বিধানসভা ক্ষেত্র থেকে তাকে জিতে আসতে হতো।
কিন্তু এই করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কোনো উপ নির্বাচন করতে চাইছেনা নির্বাচন কমিশন। তার পাশাপাশি তিরথ সিং রাওয়াত এর সময় চলে যাচ্ছিল। এর ফলে এমন একটা সময় আসবে যখন উত্তরাখণ্ডের কাছে কোন মুখ্যমন্ত্রী নেই। এই পরিস্থিতি যাতে না আসে সেজন্য আগেভাগেই বৈঠক করে শনিবার রাতে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফা পত্র জমা দিলেন তিরথ সিং রাওয়াত। মাত্র ৪ মাসও হয়নি তিনটি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। একজন আধিকারিক বললেন, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী থাকতে গেলে ৬ মাসের মধ্যে কোন একটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে আসতে হয়। কিন্তু তীরথ এর ক্ষেত্রে বিজেপি এরকম কোন আবেদন পর্যন্ত দায়ের করেনি। তাই প্রশ্ন উঠছে বিজেপি কি তিরথ সিং রাওয়াতকে আদৌ রাখতে চাই ছিল?
মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হবার পর থেকেই একাধিক ইস্যুতে তিরথ সিং রাওয়াত বিতর্কিত মন্তব্য করে সমস্যায় জড়িয়েছেন। সে মহিলাদের ক্ষেত্রে রিপড জিন্স পরা হোক, কিংবা আমেরিকার ভারতের উপর ২০০ বছরের শাসন করা নিয়ে মন্তব্য, এখানে আমেরিকা-ভারতের উপর কোনদিন শাসন করেনি। এই কারণে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী কে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন জায়গায় টার্গেট করা হচ্ছিল। তাই বিজেপি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী কে নিয়ে জায়গায় জায়গায় সমস্যার মুখে পড়েছিল। এই কারনেই মনে হচ্ছিল ছোটে রাওয়াত কে হয়তো বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাখতে চাই ছিল না অন্যদিকে সামনের বছর মার্চ মাসে উত্তরাখণ্ড বিধানসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তার আগে যেটুকু সময় পড়ে রয়েছে তার জন্য কোন নতুন মুখ্যমন্ত্রী না এনে বরং যে ৫৬ জন নির্বাচিত বিধায়ক রয়েছেন তাদের মধ্যে একজনকে মুখ্যমন্ত্রী করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি।
শনিবার দুপুর তিনটে নাগাদ বিজেপি সদরদপ্তরে একটি পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। এই বৈঠকে আগামী মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই কারণে নরেন্দ্র সিং তোমারকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়েছে উত্তরাখণ্ডে। একজন বিজেপি নেতা বলেছেন, পর্যটনমন্ত্রী সৎপাল মহারাজ এবং উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রী ধন সিং রাওয়াত সহ ৪ জনের মধ্যে একজনকে বিজেপি পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করতে পারে।