গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জেস-এর ২০২০-র বার্ষিক সভায় প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণ

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ষোড়শ গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জেস-এর ২০২০-র বার্ষিক সভায় মূল ভাষণ দিয়েছেন।

এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমাজের ভবিষ্যৎ তৈরি হবে বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগের বিষয়টি স্বল্পমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখলে চলবে না। অনেক আগে থেকেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা সঠিক সময়ে গবেষণার সুবিধা পাব। একইসঙ্গে, এই উদ্ভাবনের কাজকর্মেও সহযোগিতা ও গণ-অংশগ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। বিজ্ঞানকে কখনই অন্ধকার ঘরে আটকে রেখে সমৃদ্ধ করা যায় না। এই গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জেস কর্মসূচি এই দর্শনটিকেই খুব ভালো করে বুঝিয়েছে। তিনি বলেছেন, এখানে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, কৃষি, পুষ্টি, ওয়াশ – জল, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধির মতো নানা সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করেছেন এবং সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক সঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব এই মহামারী আমাদের উপলব্ধি করতে শিখিয়েছে। তিনি বলেছেন, অসুখ কোনও ভৌগোলিক গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বিশ্বাস, জাতি, লিঙ্গ বা বর্ণ – অসুখ তার বৈষম্য করে না। পৃথিবীতে সংক্রমণ ও সংক্রমণহীন অনেক অসুখ রয়েছে যেগুলি জনসাধারণকে, বিশেষ করে উজ্জ্বল তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। শ্রী মোদী বলেছেন, ভারতে শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় রয়েছেন। এদেশে বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করার ভালো প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এঁরা হলেন আমাদের দেশের সম্পদ, বিশেষ করে বিগত কয়েক মাস ধরে আমরা যখন কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই করছি, তখন এঁরা নানা আশ্চর্যজনক জিনিস আমাদের কাছে হাজির করে তাঁদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। রোগ প্রতিহত করা থেকে নানা বিষয়ে ক্ষমতা বৃদ্ধি – এর মধ্যে সব বিষয়ই রয়েছে।

আরও পড়ুন -  Madhumita Sarcar: অভিনেত্রী মধুমিতা হঠাৎ সাদা রঙের শাড়িতে! খুঁজে বেড়াচ্ছেন কাকে?

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনশক্তি এবং জন-উদ্যোগের মাধ্যমে ভারত কোভিড-১৯-এর মৃত্যুর হারকে যথেষ্ট কম রাখতে পেরেছে। প্রতিদিন সংক্রমণের হার কমছে। ভারতে আরোগ্য লাভের হার সবথেকে বেশি – ৮৮ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, ভারত হল সেই কয়টি দেশের মধ্যে একটি দেশ, যেখানে নমনীয় লকডাউন পালন করা হয়েছে যখন এ দেশে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল মাত্র কয়েকশ’। ভারত মাস্কের ব্যবহার করার ওপর জোর দিয়েছে। ভারতে সক্রিয়ভাবে সংক্রমিতদের সংস্পর্শে কারা এসেছেন তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -  IND Vs AUS: সুনীল গাভাস্কর ক্ষুব্ধ রোহিতের অধিনায়কত্ব নিয়ে, কি বললেন?

শ্রী মোদী জানান, কোভিডের টিকা উদ্ভাবনে ভারত প্রথম সারিতে রয়েছে। ৩০টির বেশি টিকা আমাদের দেশে উদ্ভাবনের কাজ চলছে। এদের মধ্যে তিনটি টিকা চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভারত টিকাকরণ প্রকল্পের বিষয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, ডিজিটাল হেলথ আইডি-র সাহায্যে আমাদের নাগরিকদের টিকাকরণ নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেছেন, কোভিড ছাড়াও কম খরচে ভারত উন্নত ওষুধ এবং টিকা তৈরির ক্ষমতা প্রমাণ করেছে। বিশ্বের টিকাকরণ কর্মসূচির ৬০ শতাংশের বেশি টিকা আমাদের দেশে তৈরি হয়। ভারতের অভিজ্ঞতা এবং গবেষক-মেধার সাহায্যে আমরা আন্তর্জাতিক স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবার কেন্দ্র হয়ে ওঠার জন্য উদ্যোগী হয়েছি। ভারত এই ক্ষেত্রে অন্য দেশগুলির ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করতে চায়।

আরও পড়ুন -  বিশ্ব শান্তি বৈঠকে আমন্ত্রণ পেলেন মমতা, আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী

বিগত ছয় বছরে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সুবিধা হয়েছে। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে অগ্রগতি, আরও শৌচাগার নির্মাণের ফলে দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া মানুষরা উপকৃত হয়েছেন। রোগ-ব্যাধি হ্রাস পেয়েছে। মহিলাদের যথেষ্ট সুবিধা হয়েছে। এখন সরকার বাড়ি বাড়ি পাইপের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করতে চাইছে। গ্রামাঞ্চলে আরও বেশি মেডিকেল কলেজ তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে, বিশ্বের সবথেকে বড় স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের সূচনা করেছে।

শ্রী মোদী সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এর মাধ্যমে ব্যক্তিবিশেষের ক্ষমতায়ন এবং সঙ্ঘবদ্ধ কল্যাণের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। তিনি আশা করেছেন, এই গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জেস প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হবে এবং অনেক উৎসাহব্যঞ্জক সমাধান বেরিয়ে আসবে। সূত্র – পিআইবি।