মহিষাসুর

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ শ্রীশ্রীচণ্ডী গ্রন্থে বর্ণিত দেবী দুর্গার কাহিনিগুলির মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় আবার গ্রন্থের মধ্যম চরিত্র বা দ্বিতীয় খণ্ডে উল্লিখিত মহিষাসুর বধের কাহিনিটি। এই কাহিনি অনুসারে : পুরাকালে মহিষাসুর দেবগণকে একশতবর্ষব্যাপী এক যুদ্ধে পরাস্ত করে স্বর্গের অধিকার কেড়ে নিলে, বিতাড়িত দেবগণ প্রথমে প্রজাপতি ব্রহ্মা এবং পরে তাকে মুখপাত্র করে শিব ও নারায়ণের সমীপে উপস্থিত হলেন। মহিষাসুরের অত্যাচার কাহিনি শ্রবণ করে তারা উভয়েই অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হলেন। সেই ক্রোধে তাদের মুখমণ্ডল ভীষণাকার ধারণ করল। প্রথমে বিষ্ণু ও পরে শিব ও ব্রহ্মার মুখমণ্ডল হতে এক মহাতেজ নির্গত হল। সেই সঙ্গে ইন্দ্রাদি অন্যান্য দেবতাদের দেহ থেকেও সুবিপুল তেজ নির্গত হয়ে সেই মহাতেজের সঙ্গে মিলিত হল। সু-উচ্চ হিমালয়ে স্থিত ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমে সেই বিরাট তেজঃপুঞ্জ একত্রিত হয়ে এক নারীমূর্তি ধারণ করল। কাত্যায়নের আশ্রমে আবির্ভূত হওয়ায় এই দেবী কাত্যায়নী নামে অভিহিতা হলেন। এই দেবী ছিলেন দেবী পার্বতীর অবতার। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে দেবী কাত্যায়নী আবির্ভূতা হয়েছিলেন; শুক্লা সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিথিতে কাত্যায়ন দেবীকে পূজা করেন এবং দশমীতে দেবী মহিষাসুর বধ করেন।

আরও পড়ুন -  ভোট দিলেন শাকিব খান, মাকে সাথে নিয়ে

যাই হোক, এক এক দেবের প্রভাবে দেবীর এক এক অঙ্গ উৎপন্ন হল। প্রত্যেক দেবতা তাদের আয়ূধ বা অস্ত্র দেবীকে দান করলেন। হিমালয় দেবীকে তার বাহন সিংহ দান করলেন। এই দেবীই অষ্টাদশভূজা মহালক্ষ্মী রূপে মহিষাসুর বধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন (শ্রীশ্রীচণ্ডী অনুসারে, মহালক্ষ্মী দেবী মহিষাসুর বধ করেন। ইনিই দুর্গা। তবে বাঙালিরা এঁকে দশভূজারূপে পূজা করে থাকেন)। দেবী ও তার বাহনের সিংহনাদে ত্রিভুবন কম্পিত হতে লাগল।

আরও পড়ুন -  Indian Railway: ছুটির মরশুমে কনফার্ম টিকিট পেতে চান? মেনে চলুন এই সহজ ৩টি উপায়!

মহিষাসুর সেই প্রকম্পনে ভীত হয়ে প্রথমে তার সেনাদলের বীরযোদ্ধাদের পাঠাতে শুরু করলেন। দেবী ও তার বাহন সিংহ প্রবল পরাক্রমে যুদ্ধ করে একে একে সকল যোদ্ধা ও অসুরসেনাকে বিনষ্ট করলেন। তখন মহিষাসুর স্বয়ং দেবীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করলেন। যুদ্ধকালে ঐন্দ্রজালিক মহিষাসুর নানা রূপ ধারণ করে দেবীকে ভীত বা বিমোহিত করার প্রচেষ্টায় রত হলেন; কিন্তু দেবী সেই সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিলেন। তখন অসুর অহঙ্কারে মত্ত হয়ে প্রবল গর্জন করল। দেবী বললেন,

আরও পড়ুন -  আলিয়া ভাটকে অন্য পুরুষের কাছে নিয়ে গেলেন রণবীর কাপুর মধ্যরাতে, কেন?

“ গর্জ গর্জ ক্ষণং মূঢ় মধু যাবৎ পিবাম্যহম। ময়া ত্বয়ি হতেঽত্রৈব গর্জিষ্যন্ত্যাশু দেবতাঃ।। ”
– রে মূঢ়, যতক্ষণ আমি মধুপান করি, ততক্ষণ তুই গর্জন করে নে। আমি তোকে বধ করলেই দেবতারা এখানে শীঘ্রই গর্জন করবেন।।

এই বলে দেবী লম্ফ দিয়ে মহিষাসুরের উপর চড়ে তার কণ্ঠে পা দিয়ে শূলদ্বারা বক্ষ বিদীর্ণ করে তাকে বধ করলেন। অসুরসেনা হাহাকার করতে করতে পলায়ন করল এবং দেবতারা স্বর্গের অধিকার ফিরে পেয়ে আনন্দধ্বনি করতে লাগলেন। সূত্র – সংগৃহীত।