খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাইশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০র শতবার্ষিকী সমাবর্তনে ভাষণ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে বলেছেন, মাইশোর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ভারতীয় মহান শিক্ষা ব্যবস্থার এবং ভবিষ্যৎ ভারতের চাহিদা ও দক্ষতার কেন্দ্র। এই বিশ্ববিদ্যালয় ‘রাজর্ষি’ নলভাড়ি কৃষ্ণরাজা ওয়াড়িয়র এবং এম বিশ্বেশ্বরা জি-র স্বপ্ন পূরণ করছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি ভারতরত্ন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ জীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছেন, তিনিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা যেন তাদের বাস্তব জীবনের বিভিন্ন স্তরে প্রাপ্ত শিক্ষা থেকে অর্জিত জ্ঞানকে ব্যবহার করে। তিনি বাস্তব জীবনকে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় বলে উল্লেখ করে বলেছেন জ্ঞানের প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন পন্থা, এর মাধ্যমেই শেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে কন্নড় লেখক ও চিন্তাবিদ গরুরু রামাস্বামী আয়েঙ্গারের উক্তি উদ্ধৃত করেন। শ্রী আয়েঙ্গার বলেছিলেন, জীবনের কঠিন সময়ে শিক্ষাই পথ দেখায়।
তিনি বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীর চাহিদা যাতে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা পূরণ করতে পারে তার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য পরিকাঠামো তৈরি এবং গঠনগত সংস্কারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের যুব সম্প্রদায়কে প্রতিযোগিতায় আরও সক্ষম করে তুলতে এবং শিক্ষার গুণমান বৃদ্ধি করতে ও ব্যাপ্তি বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতকে উচ্চশিক্ষার আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্বাধীনতার এতগুলি বছর পরেও দেশে ২০১৪ সালে মাত্র ১৬টি আইআইটি ছিল। গত ৬ বছরে গড়পরতা হিসেবে প্রতি বছর একটি করে আইআইটি কাজ শুরু করেছে। কর্ণাটকের ধারওয়াড়েও এরকম একটি আইআইটি তৈরি হয়েছে। শ্রী মোদী বলেছেন, ২০১৪ সালে যেখানে দেশে মাত্র ৯টি আইআইআইটি, ১৩টি আইআইএম ও ৭টি এইমস ছিল সেখানে পরবর্তী ৫ বছরে ১৬টি আইআইটি, ৭টি আইআইএম ও ৮টি এইমস, হয় তৈরি হয়েছে নয় তৈরি করার কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিগত ৫-৬ বছর ধরে উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রশাসনিক সংস্কার করা হয়েছে- এরফলে লিঙ্গ সাম্য ও সর্বাঙ্গীনভাবে সামাজিক সাম্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও স্বায়ত্ত্বশাসন দেওয়া হয়েছে যাতে তারা নিজেদের চাহিদা অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশজুড়ে আইআইএম-গুলিকে আরও অধিকার দেওয়ার জন্য প্রথম আইআইএম আইন বলবৎ হয়েছে। মেডিক্যাল শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা আনার জন্য ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন গঠন করা হয়েছে। হোমিওপ্যাথি ও অন্যান্য ভারতীয় চিকিৎৎসা ব্যবস্থার সংস্কার আনার জন্য ২টি নতুন আইন কার্যকর হয়েছে।
দেশে প্রতিটি স্তরে ছেলেদের থেকে মেয়েরা শিক্ষা ব্যবস্থায় বেশি যুক্ত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তনের গতি আনতে নতুন শিক্ষানীতি সাহায্য করবে। নমনীয় ও গ্রহণযোগ্য শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের যুব সম্প্রদায়কে প্রতিযোগিতার টিকে থাকতে সাহায্য করার জন্য নতুন শিক্ষানীতিতে বহুস্তরীয় ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সমসাময়িক সময়ের দক্ষতা, নতুন নতুন ক্ষেত্রে দক্ষতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন।
দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কেন্দ্রগুলির মধ্যে মাইশোর বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নতুন পরিস্থিতি অনুসারে উদ্ভাবনামূলক কাজকর্মে যুক্ত হতে। ইনকিউবেশন সেন্টার, প্রযুক্তি উন্নয়ন কেন্দ্র, শিল্প সংস্থা ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো এবং বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে গবেষণার আদান-প্রদানের ওপর তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। সমসাময়িক আন্তর্জাতিক বিষয়গুলির সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতি, শিল্পকলা এবং অন্যান্য সামাজিক বিষয়গুলি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার জন্য তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের যাতে তাদের ক্ষমতার মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে, প্রধানমন্ত্রী সেই আহ্বানও জানিয়েছেন । সূত্র – পিআইবি।