খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ ভারতীয় ভবন নির্মাণ ক্ষেত্র বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের গুরুত্বের বিষয়টি ইতিমধ্যেই উপলব্ধি করেছে। তথাপি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বিভিন্ন পদ্ধতি এখনও পর্যন্ত নির্মাণ শিল্পে সেভাবে সদ্ব্যবহার করা হয়নি। আধুনিক, কার্যকরি, শেডিং ডিভাইসগুলি ভারতের বিভিন্ন জলবায়ু এলাকায় ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কাজে শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তিসম্পন্ন এয়ার কন্ডিশনারগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তীব্র দাবদাহের মতো পরিস্থিতিতে শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তিগুলির প্রয়োগে ভালো সুফল মিলেছে।
দ্য এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্স ইন্সটিটিউট কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের সঙ্গে সহযোগিতায় সাধারণ বাসগৃহ এবং বাণিজ্যিক ভবনগুলিতে এক অভিনব শেডিং সলিউশন অর্থাৎ ছায়া দেওয়ার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। এই শেডিং ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে স্বদেশমার্ট। ছায়া সৃষ্টিকারী এই ব্যবস্থা ঘরের ভেতরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে যেমন সহায়ক হবে, তেমনই এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করলে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয়, তা সাশ্রয়েও সাহায্য করবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় – স্বদেশমার্ট ব্যবস্থায় বাড়ির বাইরের দিকে ছায়ার ব্যবস্থা করে কক্ষের ভেতরে তাপমাত্রা কম রাখতে সাহায্য করবে। এর ফলে, কক্ষের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে এয়ার কন্ডিশনারগুলির সময় কম লাগবে এবং স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।
আধুনিক ভবনগুলিতে শেডিং ডিভাইস খুব প্রচলিত নয়। এ ধরনের ব্যবস্থা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়ির ভেতরের দেওয়ালে শোভা পায়। এমনকি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শেডিং ব্যবস্থা বাড়ির ভেতরে স্থায়ীভাবে বানানো হয়। তাই, এ ধরনের ব্যবস্থার রক্ষণা-বেক্ষণ, নোংরা পরিষ্কার প্রভৃতি ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। পক্ষান্তরে, স্বদেশমার্ট এমনভাবে বাড়ির বাইরের দিকে বসানো হবে, যা সূর্যের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে নিজে থেকেই বাড়ির বাইরের অংশে যেখানে রোদ পড়বে, সেখানে ছায়া দেবে।
স্বদেশমার্ট ব্যবস্থাটি ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে। ভারতের যে সমস্ত এলাকায় সূর্যের কিরণ তুলনামূলক কম, সেখানে বাড়ির ভেতরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে এয়ার কন্ডিশনারের পরিবর্তে এক বিকল্প ও সুলভ মাধ্যম হিসাবে স্বদেশমার্ট ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করে তোলার কাজ চলছে। এই ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হলে বাড়ির ভেতরে প্রাকৃতিক আলোর পরিমাণ বাড়বে। অন্যদিকে, কক্ষের ভেতরের তাপমাত্রা কমানো সম্ভব হবে। স্বাভাবিকভাবেই, বাড়ির বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের বাতাবরণ অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক ধরনের শেডিং ডিভাইস রয়েছে। অবশ্য, স্বদেশমার্ট পদ্ধতি যেহেতু ভারতের নিজস্ব ব্যবস্থা, তাই এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দিক থেকে অনেক বেশি অর্থ সাশ্রয়ের মাধ্যম। স্বাভাবিকভাবেই, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দিক থেকে স্বদেশমার্ট ব্যবস্থা অনেক বেশি কার্যকরি হয়ে উঠতে পারে। রেডিয়েন্টকুলিং প্রযুক্তির ফলে রেডিয়েন্ট হিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে বাড়ির ভেতরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এমনকি, এই ব্যবস্থা এয়ার কন্ডিশনারের তুলনায় অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য দেবে। বর্তমানে রেডিয়েন্ট কুলিং পদ্ধতি এক কার্যকরি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মাধ্যম হিসাবে বাণিজ্যিক ভবনগুলিতে কাজে লাগানো হচ্ছে। এমনকি, ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড সংক্রান্ত নীতি-নির্দেশিকায় রেডিয়েন্ট কুলিং পদ্ধতিটিকে সামিল করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই পদ্ধতি কার্যকর হলে ৬০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। সূত্র – পিআইবি।