খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ উপরাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু ‘অংশগ্রহণ ও যত্নশীল’ হওয়ার মত ভারতীয় দর্শনের মূল ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ, বিশ্ব এবং সমগ্র মানবতার স্বার্থে একসঙ্গে বসবাস এবং একসঙ্গে কাজ করার মহান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
পূর্বতন মহীশূর রাজ্যের ২৫তম মহারাজা শ্রী জয়চামরাজা ওয়াদিওরের জন্ম শতবর্ষ উদযাপন সমাপ্তি অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় উপরাষ্ট্রপতি মহারাজা জয়চামরাজা ওয়াদিওরের মতো যেসমস্ত মহান শাসক ও প্রশাসকরা দেশের ইতিহাসের রূপকার ছিলেন তাদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা এবং দেশপ্রেমকে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানান।
শ্রী জয়চামরাজা ওয়াদিওরকে একজন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে অভিহিত করে উপরাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি স্বাধীনোত্তর ভারতে অন্যতম শক্তিশালী, স্বনির্ভর, প্রগতিশীল রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিলেন।
শ্রী নাইডু বলেন, মহারাজা ছিলেন একজন প্রকৃতই গণতান্ত্রিক প্রশাসক, যিনি সত্যিই একজন জনগণের শাসক হিসেবে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। সর্বদাই মানুষের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রাখতেন এবং জনসাধারণের কল্যাণ সুনিশ্চিত করেছিলেন।
লক্ষ্যণীয় যে শ্রী ওয়াদিওর মহীশূর রাজ্যে একটি দায়িত্বশীল সরকার গঠন করেছিলেন। সাংবিধানিক গণ-পরিষদ এবং একটি অন্তর্বর্তী জনপ্রিয় সরকারও গড়ে তুলেছিলেন, যার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শ্রী কে সি রেড্ডি।
শক্তিশালী গণতন্ত্র এবং ভারতের একাত্ম ও অখন্ডতায় রক্ষায় মহারাজার নেতৃত্বের কথা স্মরণ করে উপরাষ্ট্রপতি তাঁকে প্রাচীন মূল্যবোধ ও আধুনিকতার মিশ্রণে এক নিঁখুত ব্যক্তিত্ব বলে অভিহিত করেন।
শ্রী নাইডু আরও উল্লেখ করেন যে, শ্রী জয়চামরাজা ওয়াদিওর এমন একজন গুনী এবং হৃদয়বান মানুষ ছিলেন, যা তাঁকে একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সবচেয়ে প্রশংসিত শাসক হিসেবে পরিণত করেছিল।
উপরাষ্ট্রপতি বলেন, ‘চাণক্য অর্থশাস্ত্রে একজন আদর্শবান রাজার যেমন গুণাবলী ব্যাখ্যা করেছিলেন, ঠিক তেমনই তাঁর গুণ ছিল।’
শ্রী জয়চামরাজকে শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রবল সমর্থক হিসেবে অভিহিত করে শ্রী নাইডু বলেন, তিনি দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়নে এবং বৈজ্ঞানিক ভাবধারা বিকাশের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
মহীশূরের ২৫তম রাজা আধুনিক ভারতে বেঙ্গালুরুতে হিন্দুস্থান এয়ারক্রাফটস লিমিটেড, মহীশূরে কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রযুক্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বেঙ্গালোরে জাতীয় যক্ষ্মা নিরাময় প্রতিষ্ঠান এবং মহীশূরে অল ইন্ডিয়া স্পিচ অ্যান্ড হেয়ারিং ইন্সটিটিউটের মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান স্থাপনে উৎসাহ ও সমর্থন জুগিয়েছিলেন।
মহারাজা বেঙ্গালোরে ভারতীয় বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের তহবিল ও বৃত্তি প্রদানের জন্য তাঁর পরিবারের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন এবং প্রয়োজন অনুসারে সময়ে সময়ে তা সম্প্রসারণের সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
উপরাষ্ট্রপতি শ্রী ওয়াদিওরকে এক বহুমুখী প্রতিভা এবং আজীবন শিক্ষার অনুরাগী হিসেবে ব্যাখ্যা করে জানান, তিনি একজন প্রখ্যাত দার্শনিক, সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক চিন্তক এবং জনহিতৈষী ছিলেন।
উপরাষ্ট্রপতি বলেছেন, শিল্পকলা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির অতুলনীয় পৃষ্টপোষকতার কারণে তাঁকে ‘দক্ষিণী ভোজ’ বলে অভিহিত করা হত।
শ্রী জয়চামরাজের সংস্কৃত ভাষা এবং তাঁর অসামান্য বক্তৃতা দক্ষতার প্রশংসা করে শ্রী নাইডু বলেন, তাঁর ‘জয়চামরাজা গ্রন্থ রত্ন মালা’ কন্নড় ভাষা এবং সাহিত্যে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
উপরাষ্ট্রপতি এই মহান অনুষ্ঠানে ভারতীয় মূল্যবোধ, সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ সংরক্ষণ জন্য সকলের কাছে আবেদন করেছেন। সূত্র – পিআইবি / ছবি – ফাইল ।