খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ বিভিন্ন রোগ থেকে নিরাপদ থাকা বিশেষ করে হার্ট ভালো রাখার অন্যতম উপায় চুমু খাওয়া। অনেকদিন ধরেই এমন দাবি করে আসছেন গবেষকরা। কিন্তু একটা ব্যাপার কি কেউ খেয়াল করেছেন চুমু খাবার সময় কেন চোখ বন্ধ হয়ে আসে? সেটা গভীর চুমু হোক কিংবা নিতান্তই স্নেহচুম্বন।
বেশিরভাগ মানুষের ধারণা যৌনতারণা থেকেই এমনটা হয়। কিন্তু তাদের ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। গবেষকরা বলছেন অন্য কথা। গবেষকদের মতে, চুমু খাওয়ার সময় মস্তিষ্কে ভালো লাগার অনুভুতি ছড়িয়ে পড়ে। মস্তিষ্ক একই সঙ্গে দু’টি কাজ ভাল করে করতে পারে না। তাই দর্শনেন্দ্রিয়র তুলনায় স্পর্শজনিত বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে চোখকে বন্ধ হয়ে যাওয়ার নির্দেশ পাঠায় মস্তিষ্ক।
কিন্তু কেন এমন করে মস্তিষ্ক? লন্ডন ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানীদের মতে, দৃষ্টিশক্তি ও বোধশক্তি অন্য দিকে ব্যস্ত থাকলে আমাদের সেন্সরি অর্গানরা আর কোনও ইন্দ্রিয়কে অতোটা গুরুত্ব দেয় না। তাই চোখ খোলা থাকলে চুমু থেকে সার্বিক আনন্দ মেলে না। জোর করে চুমু খেতে গেলে ঠিক তার উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখায় মগজ।
যে কোনও আনন্দদায়ক বিষয়কে উপভোগ করতে গেলে চোখের পেশীরা শিথিল হয়ে যায়। তাই ভালো গান শোনা বা সুস্বাদু রান্না চেখে দেখার সময়ও চুমু খাওয়ার সময়ের মতোই চোখ বন্ধ হয়ে আসে।
ভালবাসার মানুষের শরীরের প্রতিও স্বাভাবিক চাহিদা থাকে তার পার্টনারের। চুমুর সময় তার শরীরের গন্ধ ও ত্বকের অনুভব দ্রুত মস্তিষ্কে পোঁছয়। হৃদগতি বেড়ে যায়। এমন সময় চোখ খোলা থাকলে এই গন্ধ ও ত্বকের স্বাদ বয়ে বেড়ানোর পথে বাধা পায় মস্তিষ্ক। তাই চোখ বন্ধ করে ভালো লাগার অনুভুতিকে সে ছড়িয়ে দেয় মন-শরীর জুড়ে।
এতো গেলো জীববিদ্যার ব্যাখ্যা। মনোবিদ্যাও অবশ্য এর পেছনে বেশ কিছু কারণকে দায়ি করেছে। মনোবিদদের মতে, চোখ বুজে চুমু খেলে উল্টো দিকের মানুষটার প্রতি আস্থা ও ভরসা প্রদর্শন করা হয়। পার্টনারের প্রতি সুসম্পর্ক থাকলে চুম্বনের সময় আমাদের মনে সেই ভাব আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তাই চোখ বুজে যায় সহজে।
কোনও ভয় বা দুশ্চিন্তার সময় ভালবাসার প্রকাশ আমাদের হার্টকে অনেকটা মজবুত রাখে। নিজের মানুষের প্রতি আত্মসমর্পনের উপায় খুঁজতে থাকে মন। সেই সময় চুমুর ছোঁয়া পেলে হৃদস্পন্দন বাড়ে, যৌন উদ্দীপক হরমোন ক্ষরিত হয়। এতে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার বা সবটুকু আনুগত্য প্রকাশ করার ইচ্ছা থেকেই চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
আরও এক মজার কারণ এর জন্য দায়ি বলে দাবি মনোবিদদের। তাদের মতে, পাবলিক প্লেসে হোক বা বন্ধ ঘরে, চুমু এতোই ব্যক্তিগত বিষয় যে তা অন্য কারও সামনে প্রকাশ করতে নারাজ অনেকেই। ছবি – গুগল।