খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের শক্তিশালী, তারা অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই তাই সবাই নিজ নিজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে চাইছেন। যেসব খাবার বা পানীয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে বলে সাধারণের বিশ্বাস, তার প্রায় সবগুলোই ঢুকে পড়েছে রান্নাঘরে।
আমাদের শরীরে বাইরে থেকে ঢুকে পড়া ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াইটা করে শ্বেত রক্তকণিকা। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই শ্বেত কণিকা তৈরি করে, সঞ্চয় করে রাখে এবং দরকারের সময় ছেড়ে দেয় রক্তস্রোতে। স্বাভাবিকভাবেই যার প্রতিরোধী শক্তি যত সবল, তিনি তত কম ভোগেন।
প্রতিটি মানুষের শরীর আলাদা, তার চেয়েও বড়ো ধাঁধাঁ হচ্ছে আমাদের প্রতিরোধক্ষমতা। বাইরে থেকে দেখে বোঝা সম্ভব নয় যে আপনার ইমিউনিটি কতটা শক্তিশালী, তাই তা বাড়ল না কমলো, সেটাও জানা কঠিন। আপনি রাতারাতি প্রচুর ভিটামিন খেতে আরম্ভ করলেই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার কথা নয়। সামগ্রিকভাবে সুস্থ এবং সুশৃঙ্ক্ষল থাকার চেষ্টা করতে হবে।
সুষম খাবার খান। জিমে গিয়ে ঘাম তো আর এখন ঝরাতে পারবেন না, কিন্তু অ্যাকটিভ থাকতে হবে, বাড়ির ভিতরেও হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। দেখতে হবে যেন রক্তে বাড়তি চিনি না থাকে, ফ্যাটের বোঝা না বাড়ে। রক্তচাপ স্বাভাবিক হওয়া দরকার, হরমোনের স্তরে গোলমাল হলেও চলবে না। আর এ সব ঐশ্বর্য যাদের থাকে, সাধারণত দেখা যায় তারা রোগব্যাধির সঙ্গে সহজে লড়াইও করতে পারেন।
এই যে সময়টা হাতে পেয়েছেন, সেটিকে সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগান এবং সুস্থ হয়ে ওঠার চেষ্টা শুরু করে দিন আজ থেকেই। শুরুটা করুন একেবারে সহজ কয়েকটি নিয়ম পালন করে।
এখন তো বাইরের খাবার খাওয়ার উপায় নেই একেবারেই, তাই বাড়ির রান্নাকে স্বাস্থ্যকর করে তোলার উপর জোর দিন। স্থানীয়, মরসুমি শাকসবজি ও ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। তার মাধ্যমে পাবেন প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল। তবে সমস্ত শাকসবজি ও ফল খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত। এড়িয়ে চলুন ট্রান্স-ফ্যাট।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যেন যথেষ্ট প্রো-বায়োটিক থাকে তা দেখবেন। প্রো-বায়োটিক আমাদের পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবারও থাকা উচিত খাবারে। কেবল ভিটামিন সি যে আপনাকে বাঁচায় সংক্রমণের হাত থেকে, তা ভাবলে ভুল করবেন। ভিটামিন ই এবং ডি-ও সমান জরুরি। খাবার থেকেই বি এবং এ গ্রুপের ভিটামিনও সংগ্রহ করতে হবে।
এখন যা পরিস্থিতি, তাতে মানসিক চাপ বাড়ার যথেষ্ট কারণ আছে। কিন্তু তা যেন মাত্রা ছাড়িয়ে না যায়, সে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকেই। মেডিটেশন করুন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। মনে রাখবেন, এই খারাপ সময় দীর্ঘস্থায়ী হবে না, একদিন সব ঠিক হয়ে যেতে বাধ্য। স্ট্রেস আর প্যানিক আপনাকে আরও দুর্বল করে দেবে।
ঘুমের অভাব হলে, বিশেষত ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে ‘রেস্টোরেটিভ স্লিপ’ বলে, তার অভাব হলে কিন্তু শরীর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়তে আরম্ভ করবে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতি রাতে সাত-আট ঘণ্টা ঘুম একান্ত প্রয়োজনীয়।
যারা কোনওদিন ব্যায়াম করেননি, তারা রাতারাতি প্রবল এক্সারসাইজ করতে আরম্ভ করতে আরম্ভ করলে মুশকিল। অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে আরম্ভ করলেও শরীর ভেঙে যেতে পারে। দিনে ঘণ্টাখানেক শারীরিক কসরত করলেই যথেষ্ট। ছবি – সংগৃহীত।